জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: সাত মাসের কন্যা শিশু ওজিহা। অন্য ঘরে খাটের ওপর ছোট্ট সন্তানকে রেখে খাবারের ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছেন মা জেকি আক্তার। মায়ের পাশেই বড় ভাই মাহিন। আর ওজিহার ঘরের ভেতরে বাথরুমে পড়ে আছে ছোট ভাই মহিন।
সবারই দেহ নিথর, গলা কাটা। নিস্তব্দ ঘরে দীর্ঘ সময় মা ও দুই ভাইয়ের মরদেহের পাশে একা ঘরে অক্ষত অবস্থায় ছিল ওজিহা। মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মা ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পরবর্তী সময়ের দৃশ্যপট এটি।
মা ও দুই ভাই হারানো ওজিহার বাবা শাহ আলম সৌদি আরবে রয়েছেন। তাই শিশুটিকে আপাতত ওর চাচীর কোলে তুলে দেয়া হয়েছে।
এদিকে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখছে পুলিশ। সে সঙ্গে বাড়িতে লুটপাট বা চুরির আলামতও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম।
মা ও দুই ছেলেকে গলা কেটে হত্যার এই ঘটনায় আতঙ্ক তৈরি করেছে আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী এলাকায়। চারদিকে এখন একই আলোচনা- ৭ মাস বয়সী শিশু ওজিহাকে রেখে মা ও দুই ছেলেকে হত্যার কারণ কী? এখন কী হবে ওজিহার?
আইয়ুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং নিমর্ম। সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পুরো ঘর রক্তে মাখামাখি। কন্যা শিশুটি খাটের ওপর শুয়ে ছিল। মা-ভাইদের লাশের পাশে ছোট্ট অসহায় শিশুটির চিত্র খুবই হৃদয়বিদারক।
‘আশ্চর্যের বিষয়- সব কিছু বন্ধ থাকলে দুর্বৃত্তরা ঘরের ভেতরে ঢুকলো কিভাবে? তবে ধারণা করছি, দোতলার ছাদের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়ে গেছে খুনি।’
ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্রবাসীর চাচাতো ভাই নাসির উদ্দিন বলেন, ‘শিশুটিকে না মারার কারণ বুঝতে পারছি না। শিশু ওজিহা দাদা-দাদীর কাছে রয়েছে।’